যৌতুক লেনদেন নিয়ে বিরোধে সাভারে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন গৃহিণী সোনিয়া আক্তারের নানা শহীদ মোল্লা ও মামা আবদুল মান্নান। সোনিয়ার স্বামী বখাটে আবুল কালাম ও তার লোকজন এই ঘটনা ঘটায়। কালাম তার নানাশ্বশুর ও মামাশ্বশুরকে ‘চোর’ অপবাদ দিয়ে পাইপের সঙ্গে বেঁধে পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে নির্যাতন চালায়।
এ ঘটনার পর গত বুধবার রাতেই নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, ১৩ মাস আগে সিংগাইর উপজেলার খাসেরচর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের কন্যা সোনিয়া আক্তারের সঙ্গে সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের সাধাপুর কাজীপাড়া গ্রামের বসির মহাজনের বখাটে ছেলে আবুল কালামের বিয়ে হয়। গত ১০ আগস্ট সন্ধ্যারাতে সোনিয়ার নানা ও মামা তাকে দেখতে আসেন। তখন সোনিয়ার স্বামী আবুল কালাম ও তার লোকজন তাদের আটক করে। এরপর তাদের পানির ট্যাংকির পাইপে বেঁধে বেদম প্রহার এবং পায়ে পেরেক ঢোকানো হয়। এ সময় নির্যাতনকারীরা ‘চোর চোর’ বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। ঘটনার সময় কেউ কেউ মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন। পরে এ ভিডিও ভাইরাল হলে তাতে দেখা যায়, সোনিয়ার মামা ও নানাকে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হচ্ছে।
নির্যাতন সইতে না পেরে তারা এক পর্যায়ে মাটিতে পড়ে যান। তখন নির্যাতনকারীরা একটি স্ট্যাম্পে সই-স্বাক্ষর নেয়। এ বিষয়ে সাবেক মেম্বার আরিফ হোসেন বলেন, ‘রাতে গ্রামের লোকজন নিয়ে বৈঠক বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।
তবে পানির ট্যাংকির পাইপের সঙ্গে বেঁধে দুজনকে অমানবিক নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। ’ নির্যাতনের শিকার শহীদ মোল্লা বলেন, ‘আমরা সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করার জন্য গেলে লোকজন ‘চোর চোর’ বলে আমাদের ধরে পাইপের সঙ্গে বেঁধে ফেলে এবং অনেক রাত পর্যন্ত মারধর করা হয়। সালিশেও আমাদের মারধর করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়। তারা আমাদের দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ সাড়ে চার হাজার টাকা কেড়ে নেয়। পরে বাড়ির ছাদে নিয়ে আবারও মারধর করে। এ সময় কেউ ৯৯৯ ফোন করলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। ’ সাভার মডেল থানার (ওসি) তদন্ত কামাল হোসেন বলেন, অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।